হাসনা বেগম ছাত্রী নিবাস
ঐতিহ্যবাহী এবং স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ইডেন মহিলা কলেজ। নারী শিক্ষার অগ্রগতি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানাটির অবদান সর্বাগ্রে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে আজিমপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটিতে পড়ালেখা সুযোগ পায়। কিন্তু সুষ্ঠু ভাবে এবং নির্বিঘেœ পড়াশুনার জন্য প্রয়োজনে হয় একটি নিরাপদ আবাসস্থল। ছাত্রীদের এই নিরাপদ আবাসের কথা মাথায় নিয়ে ইডেন মহিলা কলেজ বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে ৬ টি ছাত্রী নিবাস। হাসনা বেগম নিবাস তারই একটি।
১৯৭২ সালে ছাত্রী নিবাসটি নির্মিত হয়। পুরাতন হল অর্থাৎ বর্তমান খোদেজা খাতুন ছাত্রীনিবাসের সম্প্রসারণ করার চিন্তা থেকেই হাসনা বেগম ছাত্রী নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কালীন সময় থেকে হোস্টেলটির নতুন হোস্টেলের নামে দীর্ঘ দিন পরিচিত লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ আখতার বানুর সময় কালের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই নতুন হোস্টেলের নামকরণ করা হয়। ‘হাসনা বেগম ছাত্রী নিবাস’। হাসনা বেগম ছিলেন একজন সমাজসেবী তিনি সুদীর্ঘ সময় ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। তারই নামানুসারে হোস্টেলের নামকরণ করা হয়।
ইডেন মহিলা কলেজের ২নং গেইট সংলগ্ন ছাত্রী নিবাসটির অবস্থান। এর উল্টো দিকে খোদেজা খাতুন ছাত্রী নিবাস এবং পূর্বে দিকে শান বাধানো পুকুর। অসংখ্য গাছপালার শোভিত হোস্টেলটির ভিতর এবং বাইরের পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম এবং স্নিগ্ধ।
আয়তনে হোস্টেলটির খুব বেশি বড় না হলেও অবস্থানগত কারণে হোস্টেলটি সকল সময় ছাত্রীদের দ্বারা মুখোরিত থাকে। ছাত্রীনিবাসের বর্তমান ছাত্রী সংখ্যা ৪৫০ জন। তিন তলা বিশিষ্ট দুইটি বøকে বিভক্ত কক্ষ সংখ্যা প্রায় ৫২টি। এছাড়া রয়েছে ১টি অফিস রুম। ক্যাফেটেরিয়া ২টি রান্নাঘর, ১টি হল রুম, ২টি রিডিং রুম, ১টি নামাজ কক্ষ, ১টি অফিস সহকারী রুম এবং বিনোদনের জন্য একটি টিভিরুম। বর্তমান আমি এই হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করছি। সহকারী তত্ত্বাবধায়ক
হিসেবে দায়িত্বে আছেন জনাব রিক্তা আক্তার, সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রাবিজ্ঞান বিভাগ। অফিস সহকারী হিসেবে দায়িত্বে আছে মুনমুন। এছাড়া ২ জন গার্ড, ১ জন নাইট গার্ড, ৩ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী কর্মরত আছেন। আরও আছে ১ জন ইলেকট্রিশিয়ান, ১ জন প্লাম্বর ও ১ জন মালী।
কর্তৃপক্ষের সঠিক দিক নির্দেশনা ও ছাত্রী নিবাসের অভ্যন্তরীন সুযোগ সুবিধার কথা মাথায় রেখে সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য ছাত্রী নিবাসের সার্বিক ও ব্যবস্থাপনা প্রশংসার দাবী রাখে। ইতোমধ্যে ছাত্রী নিবাসের একটি প্রধান ফটক নবনির্মিত হয়েছে। একটি সুসজ্জিত অফিসরুম নবনির্মিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমান প্রশাসন ইডেন মহিলা কলেজের সুযোগ্য অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শামসুন নাহার এবং উপাধ্যক্ষ প্রফেসর তহমিনা আক্তার ছাত্রী নিবাসের সকল বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ মহোদ্বয়ের সার্বিক সহযোগিতার এবং আন্তরিক প্রচেষ্টা হাসনা বেগম হোস্টেল ছাত্রীরা নিবিড় পর্যবেক্ষণ অধিকতর সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তারা বিভিন্ন লেখাপড়ার ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। নানা প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তে¡ও হোস্টেলে ছাত্রীরা নিজেদেরকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এক পর্যায়ে পড়াশোনা সমাপ্ত করে কর্মজীবনে নিজেদের একটি উল্লেখযোগ্য পরিচিত নিশ্চিত করেছে। প্রতিবছর হাসনা বেগম ছাত্রী নিবাসের ছাত্রীরা বি.সি.এস ব্যাংক এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে এবং কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। আমরা আশা করি। কলেজ প্রশাসনের সহযোগিতা আমরা ছাত্রীদের শিক্ষাও অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদেরকে একটি উজ্জল ও আলোকে ভবিষৎ এর দিকে পৌঁছে দিতে পারব। এর ফলে একদিকে সমাজে নারীদের অবস্থান যেমন সুদৃঢ় হবে। অন্যদিকে পরিবেশ, দেশ তথা রাষ্ট্র উপকৃত হবে। আমি এই পতিষ্ঠানের সর্বাঙ্গিন সাফল্র কামনা করছি।